সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

সবচেয়ে বড় যৌন পল্লীর মেয়েদের দিনকাল

66123_girl-3

যৌন পল্লীর মেয়েরা ভালো নেই। দেশের সবচে বড় যৌন পল্লী দৌলতদিয়া এবং ফরিদপুর শহরের রথখোলা যৌন পল্লী ঘুরে পাওয়া গেছে সুদের টাকা,মাদক, গরু মোটাতাজাকরণ ট্যাবলেট,স্থানীয় মাস্তান এবং পুলিশ তাদেরকে ভালো থাকতে দেয়নি। এখানে বয়স দেহের গঠন এবং আকর্ষণ অনুসারে একজন খদ্দেরের কাছ থেকে একজন যৌনকর্মী পায় ২শ থেকে ৫শ টাকা। এক রাতে একজন খদ্দেরের কাছ থেকে পায় ৮শ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। কখনও তার চেয়ে বেশী। বেশ ভালো আয় আছে এদের। কোন কোন যৌনকর্মী মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে।

তারপরও ভালো থাকে না এরা। যৌন পল্লী ঘিরে প্রভাবশালী কিছু সুদখোর মহাজন আছে। তারা এখানে চড়াসুদে টাকা খাটায়। পুলিশের সঙ্গে যোগসাজসে এরা টার্গেট করে বিপদে ফেলে যৌনকর্মীদের। আইনের মারপ্যাচে ফেলে টাকা দিতে বাধ্য করে পুলিশ এবং স্থানীয় মাস্তানদের। অনেক সময়ই যৌনকর্মীদের ঘরে বেশী নগদ টাকা থাকে না। সে সময়ে নগদ টাকা ঋণ দিতে এগিয়ে আসে সুদখোর মহাজনরা। তারা সুদে টাকা দিয়ে তাৎক্ষনিক বিপদ থেকে উদ্ধার করে যৌন কর্মীদের। সুদের পরিমান দিনে একহাজার টাকায় ১শ টাকা সুদ। যৌনকর্মীরা যতই টাকা দিক মহাজনদের সুদের টাকা আর শোধ হয় না। মহাজনদের খাতায় থেকে যায় দেনার দায়। প্রতিবাদ করার সাহস পায় না কেউ। প্রতিবাদ করলেই কপালে জুটে প্রহার। অনুসন্ধানে জানা গেছে এমনই একজন সুদখোর মহাজন আছে ফরিদপুর রথখোলা যৌন পল্লীতে নাম জাহাঙ্গীর। সন্ধ্যা নামলেই তার ক্যাডার বাহিনী হাতুড়ি এবং সাড়াশি নিয়ে পল্লীতে সুদের টাকা আদায় করতে যায়। কেউ টাকা দিতে না পারলে বা প্রতিবাদ করলে তাকে পেটানো হয় হাতুড়ি দিয়ে, হাতের নখগুলোতে ছ্যাচা দেয়া হয় সাড়াশি দিয়ে। ভয়ে সুদের টাকা পরিশোধ করে মেয়েরা। জানা গেছে দৌলতদিয়া পল্লীতে এমন সুদখোর মহাজনের সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ জন। ওই পল্লীতে দেহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার যৌনকর্মী।

যে ট্যাবলেট খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হয় যৌন পল্লীর বাড়িয়ালীরা সে ট্যাবলেট খাইয়ে দ্রুত দেহবর্তী করে তোলে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের। দ্রুত শরীর বাড়িয়ে তাদেরকে খদ্দের উপযোগী করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এতে ওই সকল মেয়েদের কিডনি নষ্ট হয়ে যায় কয়েক বছর পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা। তাদের মৃত্যু অনিবার্য হয়ে ওঠে। এই ধরনের রোগে একাধিক মুত্যূর খবর পাওয়া গেছে দৌলতদিয়া পল্লীতে। অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িয়ালীরা তাদেরকে বের করে দেয় পল্লী থেকে। বাড়িতে ফিরে তারা মারা যায় বিনা চিকিৎসায়।

পল্লীগুলোতে মাদক এক ভয়ঙ্কর সমস্যা। আপরাধীদের অবাধ চলাফেরার স্থান পল্লী। দেশী মদ থেকে শুরু করে ইয়াবাসহ নানা জাতের নেশা অবাধ বেচা কেনা হয় এখানে। আগে কেবল অপরাধ জগতের লোকেরা নেশা দ্রব্য গ্রহণ করলেও ধীরে ধীরে নেশার জগতে জড়িয়ে পড়ছে যৌনকর্মীরা। প্রতিদিন হাতে কাচা টাকা আসায় আরও বেশী পরিমান নেশায় জড়িয়ে পড়ছে এরা। দৌলতদিয়া পল্লীর নেত্রী পারভীন জানিয়েছেন, কর্মীদের সামনে মহাবিপদ ধীরে ধীরে এরা নেশার দিকে ঝুঁকছে তার বড় কারণ অপরাধ জগতের নেশাগ্রস্ত ছেলেরা এখানে এসে মেয়েদের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে ধীরে ধীরে মেয়েদেরকে নেশার দিকে টেনে নিচ্ছে। গোয়ালন্দ এলাকায় প্রচার আছে ওই থানার ওসি বদল হয় কুড়ি লাখ টাকায়। এখানকার ওসিদের সবচেয়ে   বড় আয় পল্লী থেকে। নানা অজুহাতে পুলিশ টাকা নেয় যৌনকর্মীদের কাছ থেকে। প্রচার আছে পুলিশের মাধ্যমে ওই টাকার ভাগ যায়

রাজবাড়ির জনপ্রতিনিধিদের পকেটেও। এছাড়াও আছে স্থানীয় মাস্তান। যৌনকর্মীদেরকে নিপীড়নের মাধ্যমে তারা টাকা আদায় করে। সব মিলে ভাল নেই যৌনকর্মীরা। নানাবিধ সমস্যা ঘিরে ধরেছে তাদেরকে। এ থেকে মুক্তির কোন পথও নেই বলে জানালেন যৌনকর্মীদের নেত্রী আলেয়া বেগম। খোলাখুলি ভাবে বললেন, এখানে সকলে আসে ধান্ধা নিয়ে যৌনকর্মীদের সহায়তা করার কেউ নেই। এরা অসহায়। নিজের জীবনের সবকিছু হারিয়ে বাঁচার স্বপ্নটুকু এখানে কেবলই মিছে। কথা প্রসঙ্গে একজন যৌনকর্মী জানালেন বাঁচার আর কোন অবলম্বন থাকলে এই অভিশপ্ত জীবনে আর থাকতে চান না তিনি।