সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

ঋণ দেয়ার মত গ্রাহক পাচ্ছে না বেসরকারি ব্যাংকগুলো


হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ বরাদ্দ নিয়ে বসে আছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। ঋণ দেয়ার মত গ্রাহক পাচ্ছে না। কোনো আগ্রহ নেই ঋণগ্রহীতাদের। ব্যাংকিং খাতের সাম্প্রতিক স্থবির চিত্র এটি। চলমান রাজনৈতিক অচলবস্থার কারণে সংকুচিত হয়ে আসছে দেশের ব্যাংকিং খাত। ঋণ আমানত অনুপাত বা এলডিআর যার মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবসার অবস্থান নির্ণয় করা হয়ে থাকে সেই সূচক গত এক বছরে ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী গত সেপ্টেম্বরে ব্যাংকিং শিল্পে এলডিআর ছিল ৭১.৬৫ % অর্থাৎ শতকরা ১০০ ভাগ সঞ্চয়ের বিপরীতে ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে শতকরা ৭১.৬৫ ভাগ। অথচ গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অনুপাত ছিল শতকরা ৭৭.৮৫ ভাগ। ২০১০-১১ অর্থ বছরে অর্থের চাহিদা এতই বেড়ে যায় যে, অনেক ব্যাংকেরই এলডিআর অর্থাৎ ঋণ ও সঞ্চয়ের অনুপাত শতকরা ১০০ ভাগ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যাংকের এলডিআর ৮৫% এর বেশি হওয়া ঠিক নয়। কিন্তু চাহিদার কারণে অনেক ব্যাংকই বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া বেঞ্চমার্ক অমান্যকরে সঞ্চয়ের সমপরিমাণ বা কোন কোন ক্ষেত্রে বেশি ঋণ প্রদান করেছে।

কিন্তু বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো ঘাটতির পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে একইসাথে নতুন করে যোগ হয়েছে দেশের রাজনৈতিক অচলবস্থা। যা ব্যাংকিং ব্যবসাকে একরকম হুঁমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ দেয়ার জন্য আমাদের ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এই মুহুর্তে কেউ ঋণ নিতে রাজি নয়। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দেখে শুনে বিনিয়োগ করতে চাইছে। দেশে কি হয় না হয় তা নিয়ে আতঙ্কিত রয়েছে ব্যবসায়ীরা।

এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন বলেছেন, ঋণ দেয়ার জন্য তাদের ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও রাজনৈতিক অচলবস্থার কারণে ব্যবসার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় ঋণ গ্রহিতাদের সাড়া পাচ্ছেন না তারা।

এটা কেবল পূবালী বা এনসিসি ব্যাংকের চিত্র নয়। সব ব্যাংকের চিত্র প্রায় একইরকম। চলতি বছরের জুলাই এর শেষ নাগাদ ব্যাংকিং শিল্পের তারল্য ৮২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এরমধ্যে অতিরিক্ত তারল্য ৩০ হাজার কোটি টাকা। সাধারণত তারল্য বেড়ে গেলে তা ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত তারল্য ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বেসরকারি খাতে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ঋণ গ্রহণের হার কমে শতকরা ১১ ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে। যা গত অর্থবছরে ছিল শতকরা ২০ ভাগ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঋণের উপর উচ্চ সুদের হার ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, বর্তমানে ঋণের উপর শতকরা ১৬ থেকে ২০ ভাগ সুদ দিতে হয়। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অচলবস্থার কারণের ব্যবসার পরিবেশ দিন দিন খারাপ হওয়ায় উচ্চ সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে আগ্রহ হারাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।