সাকা চৌধুরীর মামলার রায় ফাঁস করতে জামাত শিবিরের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সাকা পরিবারের আর্থিক সহযোগিতায় চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। দেশি বিদেশি কয়েকটি গ্রুপ মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার যে চেষ্টা চালিয়েছে তার ধারাবাহিকতায় সাকার রায়ের খসড়া কপি ফাঁস হয়।
জানা যায়, ২০১২ এর ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিকভাবে ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার জন্য একটি সাইট খোলা হয় এবং এ বছরের মার্চ মাস থেকে ট্রাইব্যুনালের রায় ফাঁস করার চেষ্টা শুরু হয়। আর একে কার্যকর করতে প্রায় ২০ কোটি টাকার বাজেট করা হয় যা ধারণা করা হচ্ছে জামায়াত এবং সাকা চৌধুরীর পরিবার বহন করেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে জামায়াত শিবিরের সাবেক নেতাকর্মীদের মধ্যে কারা আইন মন্ত্রণালয়ে আছে এমন একটি অনুসন্ধানকালে সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা তাদেরকে মওদুদ আহমেদের সাথে যোগাযোগ করতে বলে কারণ সে মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বেশি চাকুরী দেয়া হয়েছে। মওদুদের সংশ্লিষ্টতা জানা না গেলেও তার অফিস থেকে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
সাকা চৌধুরীর রায়ের আগে নিজামী, মুজাহিদ ও কাদের মোল্লার রায়ের খসরা কপি যোগাড় করার চেষ্টা চালিয়েছিল ঐ চক্র কিন্তু কঠোর নিরাপত্তার কারণে সম্ভব হয়নি। সাকার রায়ের আগে বিএনপিসহ সকল পক্ষের নীরবতার কারণে নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রণালয় উদাসীন ছিল কিনা এ প্রশ্নও অনেকের। ফাঁস করার মত পরিস্থিতি ও সুযোগ তৈরি করে তারা সাকা চৌধুরীর আইনজীবি ফখরুল ইসলামের সহকারী মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করে। গ্রেফতার হওয়া নয়ন ও ফারুককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও ডিবি এ তথ্য জানতে পেরেছে।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে এর সাথে জড়িত দুটি চক্র অদৃশ্য থেকে সহযোগিতা করে এ কাজকে সহজ করে দিয়েছে। তার একটি চক্র আইন মন্ত্রণালয়ের। খসরা রায়ের কয়েকটি পাতা হস্তগত হবার পর চলে অনলাইনে প্রচারের কাজ।
সাকা চৌধুরীর আত্মীয় সুইডেন প্রবাসী ঝুনু মার্চ মাসে tribunalleaks.be সাইটটি নিবন্ধন করে। তাকে সহযোগিতা করে বেলজিয়ামে তারেক রহমানের এক ব্যবসায়িক পার্টনার। উল্লেখ্য সাকা চৌধুরীকে ঝুনুর বনানীর বাড়ি থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করতে অনলাইন প্রপাগান্ডা পরিচালনা করে জামাত শিবিরের কয়েকটি গ্রুপ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি কামাল আহমেদ শিকদারের একটি গ্রুপ লল্ডন থেকে অপপ্রচার করে। জাস্টিস কনসার্ন ওয়েবসাইট এবং বাশের কেল্লা পেজটি বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাংলাদেশে কারিগরী সহযোগিতা দান করে দুটি প্রতিষ্ঠান।
১. সৈয়দ সাদ এর প্রতিষ্ঠান। বাড়ী: ৩, রোড: ১/এ, সেক্টর: ৫, উত্তরা মডেল টাউন। ফোন: ৮৯৬০২৪৮,মোবাইল: ০১৭২৭৩৪১০২
২. টিউন৭১ গ্রুপ: বাড়ী: ২, রোড: ৩, সেক্টর: ৬, উত্তরা মডেল টাউন। মোবাইল: ০১৮২২৮৮৫৫৩৩, ০১৬৭৭৫৮২০৪০
বাংলাদেশে রায়ের প্রথম খসড়াটি প্রকাশ হয় bdtomorrow.net নামের ব্লগের মাধ্যমে যা bdtoday.net নামে প্রচলিত ছিল। তাছাড়া অন্যান্য ব্লগে প্রচার করতে না পেরে ফেসবুকে প্রচার করা হয়। প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ডেভিড বার্গমেন। বার্গমেনকে সাকার মেয়ে ফারজানা কাদের চৌধুরী ৪ কোটি টাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে যার সত্যতা তার ব্যাংক স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করলে জানা যাবে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সঙ্গে বাকি জড়িতদের পরিচয় ও লেনদেনের পরিমাণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।