সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

আগামী মাসে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে জামায়াত!


অপরাধ প্রমাণ হলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা যাবে। আর এ লক্ষ্যেই বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, জামায়াতের সংবিধান, প্রকাশনা এবং সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী সম্পর্কে ব্যাপক পড়াশোনা করছেন ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশন টিমের আইনজীবীরা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই যুদ্ধাপরাধী ধর্মভিত্তিক এ দলটিকে আগামী মাসে নিষিদ্ধ করা যাবে বলে মনে করছেন তারা।

ইতিমধ্যে উচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন। এরপর নির্বাচন কমিশন দলটিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করে। তবে আদালত তার অভিমতে বলেছেন, জামায়াত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। ফলে বিষয়টি এখনো আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া সংগঠন হিসেবে জামায়াত একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে ট্রাইব্যুনালের প্রায় সবগুলো রায়েই উল্লেখ করা হয়।

কেন জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি
একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সাজা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমসহ ছয়টি রায়ের মধ্যে পাঁচটিতেই জামায়াতকে অপরাধী সংগঠন (ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন) বলা হয়েছে। ছয়টি রায়েই বলা হয়েছে, পাকিস্তান রক্ষার নামে সশস্ত্র সহযোগী বাহিনী গঠন করে নিরস্ত্র বাঙালি, হিন্দু সম্প্রদায়, বুদ্ধিজীবী, আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী বিশেষ ভূমিকা রাখে।

ওই সময় তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী বাহিনী হিসেবে রাজাকার, আল বদর, আল শামস, শান্তি কমিটি গঠন করে। দলটির সাবেক রোকন আবুল কালাম আজাদের রায়েও জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসে। বিশেষ করে সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের মামলার রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে অপরাধী সংগঠন বলা হয়েছে।

তদন্তে যেসব গুরুত্ব পাচ্ছে
১৯৫১ সালের আহমদিয়া দাঙ্গা থেকে শুরু করে ১৯৫৩ সাল এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলী থাকছে তদন্তের আওতায়। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদীর দর্শন ও আদর্শ।

জানা গেছে বিভিন্ন লেখকের বই যেমন- জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাস, একটি জীবন একটি ইতিহাস- মাওলানা মওদূদী, মওদূদী জামায়াত ফেৎনা স্বরূপ, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী আলবদর থেকে মন্ত্রী। পাকিস্তান জামায়াতের প্রকাশিত বই, সৈয়দ ভেলি রেজা নসরের লিখিত বইসহ শত শত বই রয়েছে তথ্য সংগ্রহের তালিকায়।

এ ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলেন, ‘শুধু জামায়াতের বই-পুস্তক আর পত্র-পত্রিকাই নয়, পাকিস্তান জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবুল আ’লা মওদূদীর বই থেকে নেয়া উদ্ধৃতিও তদন্তে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’

বিচারে জামায়াত দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাইব্যুনালের রায়েই দলটি নিষিদ্ধ হবে বলে মনে করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান সমন্বয়ক এম কে রহমান।

প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, তদন্ত শেষে ট্রাইব্যুনালে অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে যেভাবে মামলা করা হয়েছে, সেই একই পদ্ধতিতে জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা হবে। তদন্ত শেষ করে তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন দিলে তার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিলে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।