সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

গ্রেনেড হামলা সম্পর্কে খালেদা জিয়া আগেই অবহিত ছিলেন


২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এ হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী। তাঁদের অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং অনেকে দেহে স্প্রিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন।

এ নারকীয় হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা ছিল সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট সরকার কোনো উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো হামলাকারীদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ সব আলামত ধ্বংস করে এবং তদন্তের নামে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে।

এ হামলায় তারেক, বাবর, নিজামী সহ তৎকালীন জোট সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনায় আলোচনার বাইরে ছিল। আলামত ধ্বংস, খুনিদের পালাতে সহায়তা করা এবং বিচারকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার যে অপচেষ্টা তাতেই এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় বেগম খালেদা জিয়া ঘটনা সম্পর্কে আগেই অবহিত ছিলেন।

জানা যায়, ওই দিন রাত ১১ টার দিকে চার জনকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে দেশ থেকে বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ছিল তাজউদ্দিন, একজন কারারক্ষী এবং কর্নেল রশিদ ও ডালিম। হামলার  কিছুদিন আগে তারা ঢাকায় এসেছিল এবং খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিল।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রশিদ ও ডালিম একজন কারারক্ষীকে হামলার জন্য ঠিক করেছিল। হামলার পর জেলখানার ভেতর গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছিল। হামলার জন্য  জেলখানা থেকে কিছু ক্রিমিনাল জোগাড় বের করে আনা হয়েছিল যাদের প্রত্যেকের হাতে গ্রেনেড ছিল। রমনা হোটেলের সামনের গলিতে এবং কয়েকটি জায়গায় সেই গ্রেনেড পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

ভয়াবহ এ হামলায় আহত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের রক্ষার বদলে ভয়াবহতার মধ্যেই লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। কোনো নেতাকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেয় নি। সব আলামত সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে ধুয়ে নষ্ট করা হয়েছিল। একটা গ্রেনেড অবিস্ফোরিত ছিল, সেটি সংরক্ষণের কথা বলায় একজন অফিসারকে ধমকানো হয়েছিল। পরে তাকে নির্যাতনও করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছিলেন।

এ হামলার কিছুদিন আগে খালেদা জিয়া বক্তৃতায় বলেছিলেন- ' শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও কোনদিন হতে পারবে না।' এর আগে কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে শেখ হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টার আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন- 'একশ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না'।

হামলার পর খালেদা জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন-ওনাকে আবার কে মারবে। উনিতো ভ্যানিটি ব্যাগে করে নিজেই গ্রেনেড নিয়ে সেখানে গেছেন এবং নিজেই গ্রেনেড মেরেছেন।

তারেক রহমান তখন প্রতিদিন সংবাদের শিরোনাম হলেও ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে-পরে চার দিন তিনি গণমাধ্যম থেকে দূরে ছিলেন। সার্বিক বিবেচনায় ২১শে আগস্ট হামলার দায় খালেদা জিয়া কোনভাবেই এড়াতে পারে না।