সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

২০০১ পরবর্তী সংখ্যালঘু নির্যাতন : খালেদা জিয়ার নির্লিপ্ততা ও ইন্ধন


বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাবলম্বীদের উপর যে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়েছিল তা কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে গণ্য হয়। যত ঘটনা ঘটেছে তার সবগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতেও দেয়া হয় নি। খালেদা জিয়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাবধান করার পরিবর্তে ঘটনা অস্বীকার করেছিলেন এবং অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছিলেন। বহু ঘটনার অভিযোগ থানায় গ্রহণ করা হয় নি। ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কমপক্ষে ২ শতাধিক ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পরও কোনো বিচারই হয় নি। নির্বাচনী সহিংসতার শিকার একজনকেও খালেদা জিয়া দেখতে যান নি বা তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করেন নি। কয়েকটি ঘটনা এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। 

অষ্টম শ্রেনী পড়ুয়া পূর্নিমা রানী শীল।  সদ্য বিজয়ী স্থানীয় নেতারা মায়ের সামনেই ধ.র্ষ.ণ করে তাকে। এত মানুষ দেখে পূর্নিমার মা বলছিলো "বাবারা, আমার মেয়েটা ছোট তোমরা একজন একজন করে এসো, মরে যাবে।"

ছবি রানী যখন ধর্ষিত হচ্ছিল তখন পাশের দোকানে পুলিশ বিড়ি ফুঁকছিল। তার চিৎকারে সাধারণ মানুষ দূরে থাক, পুলিশও সেদিন ফিরে তাকায় নি। কেউ বাঁচাতে আসেনি ছবি রানীকে। 

বাগেরহাটের যাত্রাপুরের ঠাকুর বাড়িতে এক রাতে ২৩ জন গৃহবধূকে জোট ক্যাডাররা ধর্ষণ করে এবং সেখানে দুটো হত্যাকাণ্ড ঘটায়।  

অধিকাংশ ভুক্তভোগীরা ভয়ে কোন অভিযোগ পর্যন্ত করেনি। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে লোকলজ্জা ও সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে পরিবারের মহিলারা ধর্ষিত হওয়ার পরও আইনের আশ্রয় নেয়নি বা বিষয়গুলো গোপন রেখেছেন। 

চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জের উত্তর চরফ্যাশন গ্রামের টিকেন্দ্র চন্দ্র দাস ওরফে আইচা রাম দাসের স্ত্রী অমীয় রাণী দাস, তার দশম শ্রেণী পড়ুয়া তার কন্যা শিল্পী, উত্তর চরফ্যাশনের রঞ্জন কুমার দাসের স্ত্রী শোভা রানী দাস সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় সকল বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ঘটে এবং অনেক মহিলা এ সময় ধর্ষিত হয়।

নফুজা, রহিমাদেরও ধ.র্ষ.ণ করা হয়েছিল শুধুমাত্র নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য। 

বাংলাদেশে সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগের তদন্ত অনুযায়ী, দেখা গেছে বিজামাতের ২৬,৩৫২ নেতা এবং সমর্থকদের ওই দাঙ্গায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয় গেছে। এর মধ্যে বিজামাত জোট সরকারের ২৬ জন মন্ত্রী এবং আইনপ্রণেতারা ছিলেন। অভিযুক্ত ৬ ম.ন্ত্রী হলেন: রহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আবদুস সালাম পিন্টু, মতিউর রহমান নিজামী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, তারিকুল ইসলাম ও হাফিজউদ্দিন। তাদের মধ্যে, আলতাফ হোসেন চৌধুরী তখন স্ব.রাষ্ট্রম.ন্ত্রী ছিলেন।

অনেকে বিজামাতি অতীতকে সম্পূর্ণরূপেই ভুলে গেছেন। ইয়াসমিন, পূর্ণিমার মতো রাষ্ট্রীয় মদদে সংগঠিত ২ শতাধিক ধ.র্ষ.ণের ঘটনায় কোনো বিচারই করেনি। সহানুভূতি দূরের কথা অপপ্রচার বলে ধর্ষিতদের দ্বিতীয়বার মানসিকভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। পুলিশ ও দলীয় ক্যাডাররা দলের কথিত ভাবমূর্তি রক্ষায় বিচারপ্রার্থীদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ইয়াসমিন এবং পূর্নিমার বিচারও হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ ও ২০১১ সালে।  আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে ধ.র্ষ.ক যে দলেরই হোক না কেন, তাকে অতিদ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিচারও হচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত হয়ে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করারও উদ্যোগ নিয়েছেন। তাই সুশাসন কাকে বলে সে প্রশ্ন তোলার আগে ইতিহাস পাঠ করা উচিত, বিবেক দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।