সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

আদিলুরের 'অধিকার': ধর্ষক থেকে মানবাধিকার কর্মী ভায়া রাজনীতি

আদিলুর রহমান খান, শুভ্র। ছিলেন জাসদের কর্মী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্ররা একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করলে, তিনি তাতে সংযুক্ত হতে না পেরে শুরু করেন বিরোধিতা ও অপপ্রচার। এর জের ধরে ক্ষুব্ধ সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অপকর্মের জন্য আদালত পাড়ায় সমালোচিত আদিলুর রহমানের গোঁমড় ফাঁস করে দেন। দেশবাসী জানতে পারে সাধুতার বেশ ধরা আদিলুরের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একাধিক ধষর্ণের অভিযোগে ছিল। লম্পট ও অসৎ এই ব্যক্তিই আমাদের কাছে পরিচিত মানবাধিকার কর্মী ও 'অধিকার' নামের এনজিওর সম্পাদক হিসেবে।

আদিলুর রহমান কে?

আদিলুর রহমান জাসদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বার্চনে মুন্সিগঞ্জ থেকে জাসদের প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে মাত্র ২৪০ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হারিয়েছিলেন তিনি।

অতঃপর তিনি বিএনপি নেতা মীর্জা গোলাম হাফিজ ও পরবর্তীতে মওদুদ আহমেদের শীষ্য হিসেবে কাজ শুরু করেন। মওদুদের আশীর্বাদে তিনি বিএনপি জামাতের শাসনামলে ডেপুটি এটর্নী জেনারেল নিয়োগ পেয়েছিলেন। ১/১১ এর পর বাধ্যতামূলক পদত্যাগ করানোর ভয়ে নিজেই পদত্যাগ করেন।


আওয়ামী লীগ বিরোধিতার কারণ:

জাতীয় নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর ১৯৯৫ সালে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি করার মাধ্যম হিসেবে আদিল 'অধিকার' নামের এনজিও প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের নাম বিক্রি করেই তিনি ২০০১ সালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন এবং শীতনিদ্রায় চলে যায় 'অধিকার'।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন আদিলুর। আদালত ডিজিটালাইজেশন করার প্রকল্প পাওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুবিধাবাদী চরিত্র ও অসততার কারণে সরকার সমর্থক আইনজীবীদের বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় তাকে। ডেপুটি এটর্নি জেনারেল পদে পুনরায় নিয়োগ পাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সক্রিয় করেন তথাকথিত এনজিও 'অধিকার'কে।

অধিকারের মিথ্যাচার:

২০১৩ সালের ৫মে রাতে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ঘটনা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি করে আদিলুরের প্রতিষ্ঠান ‘অধিকার’। এর উত্থাপিত অসত্য প্রতিবেদনে কাল্পনিকভাবে ৬১ জন মারা যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। প্রতিবেদনে ৫ জন ব্যক্তির নাম একাধিকবার থাকা, ১১টি কল্পিত নাম সংযুক্তকরণ, শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারীর নাম তালিকায় সংযুক্তকরণ, ঢাকার বাইরে মৃত্যুবরণ করা ৬ জনের নাম উক্ত তালিকায় যুক্ত করা সহ নানা অসঙ্গতি প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু এই প্রতিবেদনকেই সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে অনেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বক্তব্য প্রদান করেছে। এছাড়া উৎসবিহীন আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে আদিলের বিরুদ্ধে। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ২ টি ব্যক্তিগত হিসাবসহ সংস্থার পরিচালিত ৮টি হিসাব সম্পর্কে যথাযথ জবাবদিহি করতে ব্যর্থ হয় আদিল তথা অধিকার।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে আদিলুর রহমানকে অপপ্রচারের অভিযোগে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে ফেরত পাঠিয়েছিল মালয়েশিয়া সরকার।


সরকার বিরোধী অবস্থানের কারণে অনেকেই অধিকার তথা আদিলুরের পক্ষাবলম্বন করে থাকেন। কিন্তু তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কোনো সদুত্তর তারা দিতে পারবেন না। লাইসেন্স নবায়ন ছাড়াই 'অধিকার' কিভাবে গত ৭ বছর ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে; কেন এর অর্থের উৎস, কার্যক্রম ও কর্মরত ব্যাক্তিদের তথ্যাদি এনজিও বিষয়ক ব্যুরোকে প্রদান করেনি - ইত্যাদির কোনো জবাব কেউ প্রদান করে‌ন না। একাধিকবার এনজিও বিষয়ক ব্যুরো হতে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হলেও কোনো ধরনের যোগাযোগ রক্ষা ছাড়াই এড়িয়ে গেছে আদিল। অর্থাৎ 'অধিকার' এর নিবন্ধন বাতিল হোক এটাই যেন আদিলের পরিকল্পনা ছিল। আদিলুর রহমানের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড সন্দেহাতীতভাবে অসততা ও অনৈতিকতার চাদরে মোড়ানো।