ভারত-পাকিস্তানের কমলেও বাংলাদেশের রিজার্ভ বাড়ছে
বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভালো। তিন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য এমনটিই বলছে। গত এক মাসের তথ্য বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের রিজার্ভ অব্যাহতভাবে কমলেও ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। পরিমাণে কম হলেও গত এক মাসে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। ১৫ ফেব্রুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ আরও বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রফতানি ও রেমিট্যান্স ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে কমছে আমদানিও। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়বে। আর ২০২৬-২৭ অর্থবছর শেষে দেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নিয়ে তৈরি এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
এদিকে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক রাখতে প্রায় প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। রেমিট্যান্সের প্রধান শত্রু হুন্ডি চক্রকে নিয়ন্ত্রণে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। ফলে সার্বিকভাবে ডলারের সরবরাহ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সার্বিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কমে আসছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার হালনাগাদ বলছে, ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে দেশটির রিজার্ভ ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৬৬ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে, যা ২০২২ সালের এপ্রিলের পর সবচেয়ে কম।
এদিকে ৩ ফেব্রুয়ারি স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের তথ্য অনুযায়ী, তীব্র আর্থিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৭ কোটি ডলার কমেছে। এখন যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯০ কোটি ডলার। আগামী ১২ মাসের মধ্যে পাকিস্তানকে বৈদেশিক ঋণ ও সুদ বাবদ প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে দেশটি খেলাপি হয়ে পড়বে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পাকিস্তানকে এক মাসের মধ্যে ৩ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। পরের তিন মাসের মধ্যে ৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার ও শেষ আট মাসের মধ্যে ১৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে দেশটিকে।
পাকিস্তানকে আগামী সাড়ে তিন বছরে (২০২৩-এর ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৬-এর জুন পর্যন্ত) ৮০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।