সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

বিএনপি কি আরেকটি ৭৫ ঘটাতে চায় !


শত চেষ্টা করেও রাজপথে এগিয়ে যেতে পারছে না বিএনপি। তাই আন্দোলনের নামে সশস্ত্র ক্যাডারদের একত্রিত করে সহিংসতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করেছে দলটি। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানোর সঙ্গে নাশকতার পরিকল্পনায় কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন - এমন তথ্যপ্রমাণও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এসেছে।

বিএনপি আয়োজিত বিভিন্ন সমাবেশ থেকে প্রকাশ্যেই আরেকটি ৭৫ ঘটানোর হমকি দেওয়া হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও শামসুজ্জামান দুদু সহ কেন্দ্রীয় নেতারা সহিংসতা সৃষ্টির জন্য রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। 

সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আইনজীবীদের আদালত বয়কট করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বলেন, 'এখন থেকে আমাদের ভাষা হবে কেউ রক্ত নিতে এলে আমরা পাল্টা রক্ত নেবো। কেউ আঘাত করতে এলে তাকে একটা নয় পাল্টা দুইটা আঘাত করবো।'

দলীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় দলীয় কর্মসূচিগুলোতে মোটা লাঠি ও রড নিয়ে আসতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য।

এর আগেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সহিংসতার বার্তা দিয়েছিলেন। 

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ এক মাস ধরে গোপন বৈঠক করে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। বিএনপির শতাধিক ক্যাডার ও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তারেক রহমানের যোগসাজশ হয়েছে বলে তারা জানান। 

ক্যাডারদের রাস্তায় নামিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আক্রমণ করা বা শপিং মলে গ্রেনেড হামলা চালানো বা পূজা মণ্ডপগুলোত হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে।

২০০১-০৬ বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যক্তি সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের হত্যা করে ও তাদের উপর আক্রমণ-নির্যাতন চালিয়ে এবং গ্রাম ও দেশছাড়া করে সারা বিশ্বে সমালোচিত হয়।

অস্থিতিশীলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে তারেককে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত কর্তৃক "সহিংস রাজনীতির প্রতীক" হিসেবে আখ্যায়িত করে তারেকের সঙ্গে জঙ্গিদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কথা উল্লেখ করেন।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে, ভারতের সেনাবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) গগনজিৎ সিং বলেছেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্র চালানের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান ও তার সহযোগীরা। ভারতের উত্তর-পূর্বে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম এবং কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে এসব অস্ত্র সরবরাহ করার কথা ছিল।

তারেকের অনুগত ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর অস্ত্র চোরাচালান ও জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।

ভয়ঙ্কর জঙ্গি বাংলা ভাইয়ের প্রতিও সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন তারেক। তৎকালীন আইজিপি নুর মোহাম্মদ ২০০৭ সালে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন,  বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে সাফাই দেওয়া হয়েছিল যে, উত্তরের জেলাগুলিতে চরমপন্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে সহায়তা করবে বাংলা ভাই।

জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সহায়তায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার লক্ষ্যে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছিল। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা সেই পথেই হাঁটছে বিএনপি।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা, আগ্নেয়াস্ত্র এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে ঢাকার পল্টনে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা চালিয়েছিল। ওই দিন মারাত্মক সংঘর্ষ ফলে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারায়। জনতার প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে বিএনপি। এবার সেই ২৮ অক্টোবর তারিখটিই বেছে নিয়েছে তারা।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর সমাবেশের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। গণপরিবহণ ও সড়কপথে অগ্নিসংযোগ, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, অবরোধ ও রাস্তায় অগ্নিসংযোগের মতো নাশকতা সৃষ্টি করতে সারাদেশের চিহ্নিত অপরাধী ও দলীয় ক্যাডারদের সংগঠিত করতে শুরু করেছে বিএনপি।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলেন, 'মানুষের নিরাপত্তা বিধানে আমরা অবশ্যই আমাদের কাজ করব এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার যে কোনও অপচেষ্টাকে ব্যর্থ করব।'

এর আগে ২০১৫ সালেও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে বিএনপি লাগাতার অবরোধ, ধর্মঘট, অগ্নিসংযোগ, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা ও গোপন স্থান থেকে সরকার উৎখাতের ঘোষণা ইত্যাদি দিয়েছিল।

জনবিচ্ছিন্ন বিএনপির আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা আগেও ব্যর্থ হয়েছিল, এবারও তাই ঘটবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সচেতন নাগরিকগণ।

সূত্র: ইনভেস্টিং ডটকম